শীতকালিন ফল কি কি?
শীত এলে কিছু মৌসুমী ফলও বাজারে আসে, আমরা দেখি বরই, জলপাই, আমলকি, সাদা, কমলা, আপেল ও ডালিম। এই ফলগুলিতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, খনিজ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং আরও অনেক কিছু রয়েছে। এই মৌসুমি ফলগুলো শুধু সুস্বাদুই নয়, এতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান, যা দাঁত ও মাড়ি মজবুত করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আজকে কিছু শীতের ফলের পুষ্টিগুণ নিয়ে লিখছি
বরই
এই ফলটি হজমের জন্য ভালো। এটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ। বরই ফ্লু, হাঁপানি, কোলন ক্যান্সার এবং আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে খুবই উপকারী। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র নিউট্রিশনিস্ট ও ডায়েটিশিয়ান শামছুন্নাহার নাহিদের মতে, বেরিতে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এটি যেমন রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। বরই সবার জন্য ভালো কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয়। পাকা বরইতে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পাকা বরই না খাওয়াই ভালো।
পেয়ারা:
শীতকালে বাজারে পেয়ারাও পাবেন। স্বাদ, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখলে পেয়ারা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং লাইকোপেন, যা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। পেয়ারার পাঁচটি বিশেষ গুণ রয়েছে। এটি ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখের জন্য ভালো,
পাকস্থলীর জন্য ভালো এবং ক্যান্সার বিরোধী। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা কমলালেবুর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। পেয়ারায় রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড। বয়সজনিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, যেমন আলঝেইমারস, ছানি, বাত বা হাঁটুর ব্যথা।
কমলা
পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহারের মতে, কমলালেবুতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়, সর্দি-কাশি নিরাময় করে, মানসিক অবসাদ দূর করে। জ্বর ও ফ্লুতে কমলালেবু খাওয়া ভালো। পাতলা ত্বকে ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্যও কমিয়ে দেবে। কমলার রস ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। রক্তাল্পতা এবং পকেটের ক্ষত সারাতেও কমলা উপকারী।
জলপাই
শীতকালে বাজারে প্রচুর জলপাই পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন সি, ই, আয়রন এবং অসম্পৃক্ত চর্বি সমৃদ্ধ। ফলে এটি স্থূলতা কমায়, শরীরে উপকারী চর্বি বাড়ায়। বাতের ব্যথা এবং হাঁপানি দূর করতেও জলপাই কার্যকর। এই ভিটামিনগুলো শরীরের জীবাণু ধ্বংস করে, উচ্চরক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমার প্রবণতা কমায় এবং হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল ভালো রাখে।
এটি হৃৎপিণ্ড থেকে আরও বিশুদ্ধ রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছানোর অনুমতি দেয়, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। জলপাইয়ের খোসায় রয়েছে ফাইবার। এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং কোলন ক্যান্সার দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
আমলক্কি :
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আমলকি দাঁত, চুল ও ত্বকের জন্য ভালো। এটি ক্ষুধা বাড়ায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, অ্যাসিডিটি, রক্তস্বল্পতা এবং বমি বমি ভাব দূর করতেও সাহায্য করে। আমলকিতে কমলার চেয়ে ২০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।